ফাইনালে নিউজিল্যান্ড : নাটকীয় জয়ে

0
960
ফাইনালে নিউজিল্যান্ড : নাটকীয় জয়ে

ম্যাচের আগে আলোচনায় ছিল সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। লর্ডসে সেবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘটনাবহুল ফাইনালে সুপার ওভারে টাই শেষে বেশি বাউন্ডারির সুবাদে শিরোপা কুড়ায় ইংল্যান্ড। তবে এবার মধুর প্রতিশোধই নিলো কিউইরা। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছালো নিউজিল্যান্ড। গতকাল আবুধাবিতে ইংল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে হারায় কেন উইলিয়ামসনের দল। আগে ব্যাটিং শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৬৬/৪। জবাবে ৬ বল বাকি রেখেই টার্গেট পার করে কিউইরা। নাটকীয় ম্যাচে হার না মানা ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ডেরিল মিচেল।

৪৮ বলের ইনিংসে চারটি করে চার-ছয় হাঁকান কিউই ওপেনার। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শেষ চার বিশ্বকাপের তিনটিতে ফাইনালে পৌঁছার কৃতিত্ব দেখালো নিউজিল্যান্ড।
আবুধাবিতে অপেক্ষাকৃত বড় টার্গেটে ইনিংসের শুরুতে ধাক্কা খায় কিউইরা। বল হাতে নিজের শুরুর দুই ওভারে সাফল্য পান ক্রিস ওকস। ইংলিশ পেসারের বলে ব্যক্তিগত ৪ রানে সাজঘরে ফেরেন মার্টিন গাপটিল। কিউই ওপেনারের ক্যাচ নেন মঈন আলী। পরে ১১ বলে ৫ রান করে আউট হন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ওকসেরই বলে এবার ক্যাচ নেন আদিল রশিদ। এতে ৩ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩/২-এ। তৃতীয় উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন ডেরিল মিচেল ও ডেভন কনওয়ে। কিন্তু শুরুতে তাদের ব্যাটিংটা ছিল মন্থর। জুটিতে তাদের অর্ধশত (৫২) রান পূর্ণ হয় ৪৮ বলে। শেষ পর্যন্ত এই জুটির সংগ্রহ পৌঁছে ৮২ রানে। ৩৮ বলে ৪৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন কনওয়ে। স্পিনার লিভিংস্টোনের বলে স্টাম্পিং হন তিনি । কনওয়ের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও একটি ছক্কার মার। তবে ১৩.৪তম ওভার শেষে ৯৫/৩ সংগ্রহ নিয়ে সম্ভাবনা ধরে রাখে কিউইরা। বল হাতে চার ওভারের স্পেলে মাত্র ২২ রানে দুই উইকেট নিয়ে কিউইদের জন্য ম্যাচ কঠিন করে তুলেছিলেন ইংলিশ স্পিনার লিভিংস্টোন। এরপর কিউইরা দেখায় শেষের ঝলক। ১১ বলে ২৭ রান করেন জিমি নিশাম। ইংলিশ পেসার ক্রিস জর্ডানের এক ওভারেই কিউইরা নেয় ২৩ রান।
এর আগে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটির দেখা পান মঈন আলী। গতকাল হার না মানা ইনিংসে ৩৭ বলে ৫১ রান করেন তিনি। ইনিংসে ইংল্যান্ডের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার হাঁকান তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ইংল্যান্ড দলে ছিলেন না ইনফর্ম ব্যাটার জেসন রয়। আগের ম্যাচে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন ইংলিশ ওপেনার। রয়ের বদলে একাদশে সুযোগ পান স্যাম বিলিং।
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে শুরুটা খারাপ ছিল না ইংল্যান্ডের। তবে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত ক্যাচে ভাঙে ইংল্যান্ডের ৩৭ রানের ওপেনিং জুটি। বাঁ-হাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্টের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আসরে প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা জনি বেয়ারস্টো। ৮.১তম ওভারে অপর পেসার অ্যাডাম মিলানের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন  চলতি বিশ্বকাপের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান জস বাটলার। ১০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬৭/২-এ। ২৪ বল মোকাবিলায় চার বাউন্ডারিতে ২৯ রান করেন বাটলার। জনির ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ১৩ রান।
তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন  ডেভিড মালান ও মঈন আলী। এ দুজন গড়েন ৬৩ রানের জুটি। ৩০ বলে ৪১ রান করে টিম সাউদির বলে ক্যাচ দেন মালান। ইনিংসে মালান হাঁকান চারটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা। ১৫.২তম ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৬/৩-এ। তবে মঈন আলীর দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত বড় পুঁজিই পায় ইংল্যান্ড। এবারের বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি মঈন। আগের তিন ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল যথাক্রমে ৩, ১* ও ৩৭।
চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের জুটি গড়েন মঈন ও লিভিংস্টোন। একটি করে চার-ছয়ে লিভিংস্টোন করেন ১০ বলে ১৭ রান। ইনিংসের শেষ ১০ ওভারে ৯৯ রান করেন ইংলিশরা।সূত্র: মানবজমিন।