এবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু পাচার

0
345
এবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু পাচার

আলীকদম উপজেলার পর এবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত দিয়ে  অবৈধভাবে পার হচ্ছে শত শত গরু। আইনকে কোন তোয়াক্কা না করে চলেছে বিভিন্ন চোরাই পথে আনা অবৈধ গরুর ব্যবসা। জড়িতও রয়েছে স্থানীয় বেশ কয়েকজন সিন্ডিকেট। এর ফলে নাইক্ষ্যংছড়ি এবং রামু উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অবৈধ চোরাই গরুর পাচার হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।

জানা গেছে, দুই উপজেলার জামছড়ি ফুলতলী,আশারতলী চাকঢালা,কম্বনিয়, জারুলিয়াছড়ি  তুমব্রুসহ বেশ কিছু চোরাকারবারি স্থানীয় প্রভাবশালীদের  সঙ্গে নিয়ে এই অবৈধ বাণিজ্য করে আসছে। এতে করে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব যেমন হারাচ্ছে, ঠিক তেমনি মাদক বিস্তারের সুযোগও তৈরী করেছে এই চক্রটি। কিন্তু গত আগস্ট মাস ধরে মিয়ানমার সীমান্তে সেদেশের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় থাকার পরও মিয়ানমারে ওপার থেকে কিভাবে অবাধে গরু আসছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। কিভাবে অবৈধ পথে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুর কচ্ছপিয়া  বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে মায়ানমারের গরু মহিষ বাংলাদেশে ঢুকছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আসা অবৈধ গরু মূলত বান্দরবান ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাংস বিক্রির জন্যই সারাবছর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে  মায়ানমার থেকে অবৈধ পথে গরু আনা হয়। এসব গরুর বেশিরভাগই স্টেরয়েড দিয়ে মোটাতাজা করা হয়। এতে সাধারণ মানুষের দেহের বিভিন্ন রোগ ধারণ করবে বলে আশঙ্কা ও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকমাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি ও পুলিশ চোরাই গরু আটকে তৎপর হলে চোরাকারবারিরা পথ পাল্টিয়ে রামুর কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়ার ফাক্রিকাটা,ক্যাজর বিল নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী, ঈদগড়, কাগজিখোলা পথ ব্যবহার করে আসছে।  মিয়ানমারের চোরাই গরুর কারণে দেশীয় গরু খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি গরু ব্যবসার আড়ালে মাদকের বিস্তারও বেড়ে যাচ্ছে।  চোরাকারবারিরা মিয়ানমারের ওপারের ব্যবসায়ী ও বিজিপির সঙ্গে সম্পর্ক না-রাখলে সীমান্তের এমন পরিস্থিতিতে গরু আনা সম্ভব নয়। তাই এসব চোরাকারবারি দ্বারা রাষ্ট্রের কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ানমার  থেকে আসা গরু মাংসের দোকানগুলোতে কোনো রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই জবাই করে বিক্রি করা হয়। এসব গরুর মাংসের মাধ্যমে জনসাধারণ নানান জটিল রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী জামছড়ি ও ফুলতলী এবং জারুলিয়াছড়ি  এলাকা দিয়ে গত এক মাসে অধিক সময় ধরে অবৈধ গরুর ব্যবসা চলে আসছে। এই সময়ে নাইক্ষ্যংছড়ি  উপজেলার ১১ বিজিবি  কয়েক মাসে প্রায় ১কেটি টাকার ৭৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা মহিষ গরু জব্দ করে এবং ককসবাজার জেলার ৩৪ বিজিবি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু  থানা’র  পুলিশ একাধিক অভিযান করে অসংখ্য  অবৈধ গরু আটক করতে সক্ষম হয়।
এই ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শফিউল্লাহ জানান, যারা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু বাংলাদেশে আনছে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিবে। এসব অবৈধ গরু ব্যবসায়ীদের ধরতে উপজেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সবসময় সহযোগিতা করবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্নেল মো. রেজাউল করিম জানান, সীমান্ত পথে গরু চোরাচালান রোধকল্পে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি কর্তৃক কঠোর নজরদারী ও গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, যে সকল ব্যক্তিবর্গ চোরাচালানী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত এবং সে যেই হোক চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং যেকোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে বিজিবি’র  তৎপরতা অব্যাহত আছে।